রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছে দিনমজুর মানুষেরা

প্রথম প্রকাশঃ মার্চ ২২, ২০২০ সময়ঃ ২:৪৪ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ২:৪৪ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানী ছাড়ছে শুরু করেছে দিনমজুর মানুষগুলো। করোনার কারনে কয়েকদিনে পাল্টিয়ে গেছে পুরো ঢাকার শহর। যে ঢাকার শহরে কোথায়ও পা ফেলার জায়গা ছিলোনা সেই ঢাকার শহর এখন জনশূন্য। কোথায়ও তেমন কোন মানুষের দেখা মিলে না। বন্ধ হয়ে গেছে সকল ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বন্ধের মুখে পড়ে গেছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসাই প্রতিষ্ঠানগুলো।

অাকাশপথ,সড়কপথ ও নৌপথসহ প্রায় সকল ধরনের যোগাযোগ এখন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে সকল ধরনের অামদানি-রপ্তানি। মহাসংকটে পড়ে গেছে দিনমজুর মানুষগুলো। বন্ধ হয়ে গেছে তাদের অায়-ব্যয়ের প্রায় সকল রাস্তা। কোণ ঠাসা হয়ে গেছে এই দিনমজুর মানুষগুলো তারা এখন কি করবে।

সবকিছু বন্ধ হওয়াতে খাদ্যদ্রব্য দাম লাগামহীন ভাবে বেড়ে গেছে। সাধারন মানুষের লাগাতার বাহিরে চলে গেছে নৃত্যপর্ণ্যের দাম। যাদের টাকা অাছে তারা অতিরিক্ত নৃত্যপর্ণ্যের কিনে মজুদ করে রাখছে। কিন্তু যারা দিনমজুর তাদের অবস্থা একদম করুন হওয়ার পথে। তাই দিনমজুর মানুষগুলো রাজধানী ছেড়ে নিজ নিজ গ্রামে চলে যাচ্ছে।

এদিকে অনেক বাড়িয়ালার বৃদ্ধি করেছে বাড়ির ভাড়া। বাড়িয়ালার বলছে অামরা বাড়িভাড়া বৃদ্ধি করেছি অারো একমাস অাগে এমন অবস্থা হবে অামরা জানতাম না। তারা বলছে সরকার গ্যাস-বিদুৎ এর দাম বৃদ্ধি করাতে অামরা বাড়িভাড়া বৃদ্ধি করেছি।

দিনমজুর সাধারন মানুষগুলো বলছে,বন্ধ হয়ে গেছে দৈনন্দিন কাজকাম নেই কোন অায়-ব্যয় বাড়ছে নৃত্যপর্ণ্যের দাম,বাড়ছে বাড়িভাড়া অন্যদিকে করোনার ভয়তো অাছেই এমন অবস্থায় কিভাবে থাকবো অামরা ঢাকার শহরে। ঢাকার শহর থাকতে হলে হয়তো ঋণের বোঝা বইতে হবে নতুবা না খেয়ে মরতে হবে। কেনোনা অামরাতো খাদ্যদ্রব্য মজুত করে রাখতে পারবো না। এমন টাকা পয়সা অামাদের নাই। তাই নিজ গ্রামে গিয়ে ক্ষেতখামার করা ভালো।

ভোরের অালো ফুটতে না ফুটতে গনপরিবহনের অালোতে অালোকিত হয়ে যেতে রাজধানী ঢাকার শহর। রিক্সার টুনটুনানি অার বিভিন্ন পরিবহণের প্যা-পু শব্দে মুখোরিত ছিলো ঢাকা এখন সেই ঢাকা একদম ফাঁকা। নেই অাগের মত গাড়ি রাস্তাঘাটে, নেই তেমন কোন যাত্রী। করোনার ভয়ে কেউ বের হচ্চে না রাস্তাঘাটে।

গনপরিবহনের চালক হেল্পারা বলছে,রাস্তাঘাটে যাত্রী নাই একদম ফাঁকা পাশাপাশি নেই তেমন গাড়িও। যেখানে গাড়ি এবং যাত্রী ছিলো ভরপুর ছিলো অতিরিক্ত চাপ। হয়তো এখন যে গাড়িগুলো মাঝে মাঝে চলতে দেখা যাচ্ছে তাও হয়তো বন্ধ হয়ে যেতে পারে এমন অবস্থা থাকলে। রিক্সা চালকরা বলছে, অামাদের প্রধান টিপ হলো স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকরা। যেহেতু স্কুল-কলেজ বন্ধ সেহেতু অামাদের রিক্সা চালানো বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

ছোট-ছোট মিনি গার্মেন্টস,কারখানা এবং ফ্যাক্টরি মালিক শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,তাদের ব্যবসার অবস্থা খুবেই খারাপ। মালিকরা বলছে তারা মনে হয় শ্রমিকদের ঠিক মত বেতনও দিতে পারবে না। বন্ধের মুখে তাদের ব্যবসাই প্রতিষ্ঠান। কোথায়ও কোন মালামাল অামদানি-রপ্তানি করতে পারছে না তারা। মালামাল অামদানি-রপ্তানি না করতে পারলে অামরা কিভাবে বেতন দিবো অভিযোগ তাদের।

যে অবস্থা দেশে বিরাজ করছে তা কখন যে ঠিক হয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় অাসবে এটা কেউ বলতে পারছে না। এমন অবস্থা যদি দিনদিন অারো বৃদ্ধি পায় তাহলে খেটে-খাওয়া দিনমজুর মানুষগুলো মহাসংকটে পড়ে যাবে। নষ্ট হয়ে যাবে তাদের জীবন যাত্রা। নিঃশ্ব হয়ে যেতে পারে তাদের বেঁচে থাকা। তাই দিনমজুর মানুষগুলো বলছে,খাদ্যদ্রব্য দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং পাশাপাশি সিন্ডিকেট মালিকরা যাতে খাদ্যদ্রব্য মজুত করতে না পারে সেই দিকে সরকারের কঠোর সর্তকতা রাখা।

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

সর্বাধিক পঠিত

20G